আমন মৌসুমের আগে দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এর মধ্যে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ৪৩ দিনে যশোরের বেনাপোল বন্দরে এসেছে সাড়ে ১৩ হাজার টন চাল।
প্রতিকেজি চালের আমদানি মূল্য ধরা পড়েছে দশমিক ৪০৫ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ টাকা। তবে বাজারজাত করতে এর সঙ্গে পরিবহন, ট্যাক্স, গুদামভাড়াসহ আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছরের ২১ অগাস্ট ভারত থেকে নয়টি ট্রাকে ৩১৫ টন চাল আমদানির মধ্য দিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে প্রথম চালান। সবশেষ মঙ্গলবার পর্যন্ত ৮৮ দিনের মধ্যে ৪৩ কার্যদিবসে প্রায় ১৪৫টি চালানের বিপরীতে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ টন মোটা চাল এ বন্দরে প্রবেশ করে।
অগাস্টে ১২৬০ টন, সেপ্টেম্বরে পাঁচ হাজার ৪৩৫ টন, অক্টোবরে পাঁচ হাজার ১৮৮ টন এবং নভেম্বরে এক হাজার ৬৪৫ টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল ছাড়করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চার থেকে পাঁচটি সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট কাজ করছে। বন্দরের ৩১ নম্বর শেডে আমদানি করা চালের খালাস সম্পন্ন করা হয়।
সি অ্যান্ড এফ এজেন্টের প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “চাল আমদানির শুরু থেকে আমরা কাস্টমস হাউজে চাল ছাড়করণের জন্য কাজ করে আসছি। চার মাস পর ২১ অগাস্ট থেকে পুনরায় ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। যে পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে, তার অধিকাংশই ‘ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের’ মাধ্যমে ছাড় করেছি।”
বেনাপোলে বন্দর ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, “প্রতিদিন চালের চালান আসে না। অগাস্টের শুরুতে চাল আমদানির পরিমাণ বেশি থাকলেও বর্তমানে অনেকাংশে কমে গেছে।
“তবে দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হওয়ায় বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে চালের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।”
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, “চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সবশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপত্র ইস্যু করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠায়।
“বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে আমদানিকারকদের ‘ইমপোর্ট পারমিট’ বা আমদানি অনুমতিপত্র জারি করে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে ২১ অগাস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে।”
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ হাজার ৫২৮ টন চাল আমদানি হয়েছে। বর্তমানে আমদানি কমে গেলেও তেমন সমস্যা হবে না। এর মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ ধান বাজারে আসলে চালের দাম কমে আসবে।
আমদানি করা চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ।


No comments:
Post a Comment